শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বদলে গেছে খানসামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা মান

এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ॥ জনবল ও বরাদ্দ সংকটের মধ্যেও মানসম্পন্ন ও মর্যাদাপূণ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে উদ্ভাবনী কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন,স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার কারনে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় বদলে গেছে স্বাস্থ্য সেবার মান আর সন্তুষ্ট সেবাগ্রহীতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক বছর আগে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা চিকিৎসক সংকটে এবং সেবার মান ভালো না হওয়ায় হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল সেই অবস্থা থেকে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের “জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা” বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনবল সংকট কমানো এবং উর্দ্ধতন কর্তপক্ষের নিয়মিত তদারকির কারনে খানসামা  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান হয়েছে উন্নত।

দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার ফলে এই সরকারি হাসপাতাল দেশের অন্য উপজেলা হাসপাতাল থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। হাসপাতালটি ঝকঝকে পরিষ্কার আর রয়েছে সুসজ্জিত ফুলের বাগান এবং একদল পরিশ্রমী চিকিৎসক,নার্স-মিডওয়াইফ,ওয়ার্ড বয় ও কর্মচারী।

যার ফলে স্বাস্থ্য সেবার মানের দিক বিবেচনায় গত বছর রংপুর বিভাগের শ্রেষ্ঠ হয় খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে জানা যায়, জরুরী সেবা প্রতিদিন গড়ে আউটডোরে ৪-৫শ রোগী দেখা,ভর্তি রোগীদের সার্বক্ষণিক তদারকি,বিনামূল্যে প্যাথলজি সেবা আর কফ ও যক্ষা পরীক্ষা,অভিযোগ বক্স স্থাপন এবং সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন প্রকার ঔষুধ প্রদানে স্বচ্ছতা,বীর মুক্তিযোদ্ধা,অটিজম ও মাদকাসক্ত কর্ণারে বিশেষ সেবা প্রদান,স্বাস্থ্য শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নিয়মিত পরিদর্শন ও নির্দেশনার মাধ্যমে সেবা নিশ্চিতকরণ ও ইপিআই কার্যক্রমে রয়েছে সফলতা।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যতিক্রমী উদ্যোগগুলো হল প্রেগন্যান্সি ম্যাপের মাধ্যমে গর্ভবতী মায়েদের ডাটাবেজ তৈরী করে গর্ভবতী মায়েদেরকে প্রসব পূর্ববর্তী মানসম্মত এএনসি সেবা, প্রসব পরবর্তী কেএমসি ও পিএনসি সেবা দেওয়া হয় এবং গর্ভবতী মায়েদের পরিবহনের জন্য বিনামূল্যে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস,বিনামূল্যে প্রসাব ও রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা ও ফ্রি আয়রন আর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট প্রদান এবং প্রতি ইউনিয়নে প্রেগন্যান্সি মাদারস ক্লাবের বৈঠকের মাধ্যমে নরমাল ডেলিভারি কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি করতে উদ্ধুদ্ধকরণ কর্মসূচী পালিত হয়।

এছাড়াও প্রশংসনীয় ও কার্যকরী উদ্যোগগুলো হল গর্ভবতী মায়েদের যেকোনো প্রয়োজনে ২৪ঘন্টা হটলাইন সার্ভিস চালু, প্রসবকালীন জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও নিরাপদ প্রসবের জন্য সারাক্ষণ মিডওয়াইফ প্রস্তুত থাকা, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নবজাতক শিশুদের উপহার সামগ্রী প্রদান ও শিশুদের জন্মসনদ প্রদান করা হয়।

এতে উপজেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রোগীদের আস্থা ও সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে যার ফলে খানসামা উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির হার শতভাগ।

সেবা নিতে আসা ছাতিয়ানগড় গ্রামের কুলসুমা বেগম জানান, আগোত তো ডাক্তার দেখায় গেইছিলো না এখন সবসময় ডাক্তার আছে এইঠে পরীক্ষাও হয় আর ঔষুধ দেয় ফ্রি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল জানান, সকলের সদিচ্ছার কারনে সেবার মানে পরিবর্তন এসেছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রয়োজন। এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য প.প.কর্মকর্তা ডা. আবু রেজা মো.মাহমুদুল হক জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সাংসদ আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপির দিকনির্দেশনায় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে নিরলসভাবে আমরা চেষ্টা করছি তবে ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেলে এবং জনবল ও বরাদ্দ সংকট কমলে সেবার মান আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি হবে।

Spread the love