শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ভূল চিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এক পল্লী চিকিৎসকের ভূল চিকিৎসায় কবির মিয়া (১১ মাস) নামে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।  শনিবার দুপুরে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেকরির চর গ্রামের সাজু মিয়ার ছেলে কবির মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা সদরের মীরগঞ্জ বাজারের ‘শান্তি নিকেতন চিকিৎসালয়ে’র পল্লী চিকিৎসক ডাক্তার মো: শামছুল আলমের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক শামছুল আলম রোগী সম্পর্কে শুনে তাৎক্ষণিকভাবে শিশু কবির মিয়ার শরীরে ‘ট্রাইম্যাক্স ইনজেশন’ পুশ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই শিশু কবির মিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন ওই চিকিৎসক শামছুল আলম শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পরামর্শ দেন। শিশুর অভিভাবকরা দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে থানার এসআই মোতালেব মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আশরাফুজ্জামান সরকার জানান, বিধি মোতাবেক একজন পল্লী চিকিৎসক শিশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে ‘ট্রাইম্যাক্স ইনজেশন’ দেয়ার পরামর্শ দিতে পারেন না। এমনকি নিজেও ট্রাইম্যাক্স ইনজেশন শিশুর শরীরে পুশ করতে পারেন না।

তিনি আরও বলেন, পল্লীচিকিৎসক শামছুল আলমের বিরুদ্ধে এ ধরণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য কমপে-ক্সের শতকরা ৯০ ভাগ ভর্তি হওয়া অসুস্থ শিশু রোগি পল¬ী চিকিৎসক শামছুল আলমের ‘শান্তি নিকেতন চিকিৎসালয়’ থেকে আসা।

উল্লেখ্য, শামছুল আলম নিজেকে সার্টিফিকেট ইন প্যারামেডিকস্ (রাজশাহী), মেডিকেল প্রাকটিনার, নবজাতক মা, শিশু ও কিশোর রোগ চিকিৎসক (গভ: রেজিঃ নং-১০৯৪৩০) দাবি করেন।

শামছুল আলম বলেন, শিশু কবির মিয়াকে নিয়ে দুপুরে তার বাবা সাজু মিয়া আমার চিকিৎসালয়ে আসে। আমি তাকে ট্রাইম্যাক্স ইনজেশন পুশ করি এবং লেবুলাইজারের মাধ্যমে শরীরের ভেতরে ওষুধ প্রয়োগ করি। এর কিছুক্ষণ পর আমার চিকিৎসালয় থেকে তারা চলে যায়।

তিনি বলেন, হায়াত-মওউত আল্লাহর হাতে। আমি রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করেছি। তবে ট্রাইম্যাক্স ইনজেশন শিশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমি প্রয়োগ করতে পারব কি না তা আমার জানা নেই। রোগ অনুযায়ি ইনজেকশন দিয়ে থাকি এবং ফলও পাই।

শিশু কবিরের বাবা সাজু মিয়া জানান, ইনজেশন দেয়ার পরপরই আমার বাচ্চাটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করবো কি না তা ভেবে দেখেনি। তবে বিভিন্ন স্থানে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোলেমান আলী জানান, মৃত শিশুটির বাবা সাজু মিয়া আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। এর আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আশরাফুজ্জামান সরকারের কাছ থেকেও মোবাইল ফোনে বিষয়টি জেনেছি। শিশুর পিতাকে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

Spread the love